বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) দেশের ট্রান্সশিপমেন্ট পরিস্থিতিকে শুধুমাত্র একটি চ্যালেঞ্জ নয়, বরং তা থেকে উদ্ভূত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর সুযোগ হিসেবে দেখছে। বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সম্প্রতি এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, দেশের পরিবহন অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে এই মুহূর্তটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।
চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানান, বিদেশি ক্রেতারা বর্তমানে ভারতীয় বিমানবন্দর ব্যবহার করে পণ্য পরিবহন করছে, যা একদিকে বাংলাদেশের জন্য হুমকি হলেও অন্যদিকে একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, “ঢাকা বিমানবন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলোর আধুনিকায়নের মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করতে পারি।”
বিডার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঢাকা ছাড়াও সিলেট, সৈয়দপুর, কক্সবাজার ও লালমনিরহাট বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ জোরেশোরে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আশিক চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে গাজীপুরে উৎপাদিত একটি টি-শার্ট কলকাতা হয়ে পাঠানো ঢাকা থেকে সরাসরি পাঠানোর চেয়ে সস্তা। এই প্রবণতা আমাদের বিমানবন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাধ্য করছে।”
বিডা সামুদ্রিক বন্দর উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- বে টার্মিনাল প্রকল্প চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ।
- মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে ফ্রি ট্রেড জোন প্রতিষ্ঠা।
- নেপাল ও ভুটানের সাথে কানেক্টিভিটি বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ।
বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে বিডা বেশ কিছু নতুন নীতি প্রণয়নের কাজ করছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- প্রবাসী বাংলাদেশীদের মাধ্যমে বিনিয়োগ আনতে বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ।
- বড় অঙ্কের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রেমিট্যান্সের অনুরূপ পুরস্কার ব্যবস্থা চালু।
- ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিবর্তে ১০টি কৌশলগত অঞ্চলে ফোকাস করে কাঙ্ক্ষিত গুণগত মান অর্জনের পরিকল্পনা।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বিডা একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির কাছে তাদের চূড়ান্ত প্রস্তাব উপস্থাপন করবে। আশিক চৌধুরী বলেন, “পরিমাণ নয়, গুণগত মান নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও পরিবহন খাতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারব।”
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ
