২০২৬ বিশ্বকাপ বসছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে। ফুটবল বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত এই আসর ঘিরে অনেক তারকার ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত হলেও, লিওনেল মেসিকে ঘিরে পরিকল্পনায় আশার আলো দেখছে ইন্টার মায়ামি।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে পিএসজি থেকে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকার (এমএলএস)-এ যোগ দেন আর্জেন্টাইন এই সুপারস্টার। মেসিকে পাওয়ার পর থেকেই যেন বদলে যেতে শুরু করে এমএলএস। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই লিগও এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। লিওনেল মেসির পর এমএলএসে যোগ দিয়েছেন তার দীর্ঘদিনের সতীর্থ লুইস সুয়ারেজসহ ইউরোপ মাতানো আরও কয়েকজন তারকা।
চলতি বছর শেষেই মেসির সঙ্গে ইন্টার মায়ামির চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তবে ক্লাবটি চাইছে তাকে আরও কিছুদিন নিজেদের জার্সিতে দেখতে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, মেসির সঙ্গে চুক্তি নবায়নের বিষয়টি অনেকদূর এগিয়ে গেছে। দুই পক্ষের আলোচনাও চলছে পুরোদমে এবং আশা করা হচ্ছে, ৩৭ বছর বয়সী এই ফুটবল গ্রেট চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন।
মায়ামির মালিকানাধীন ব্যবস্থাপনার অন্যতম মুখ জর্জ মাস এ বিষয়ে বলেন, “চুক্তি নবায়নের আলোচনা চলছে এবং এটা একান্তই মেসির সিদ্ধান্ত। আমি সব সময়ই আশাবাদী ছিলাম। আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাব। আমরা চাই, ২০২৬ সালে নতুন স্টেডিয়াম উদ্বোধনের সময় মেসিকে আমাদের জার্সিতে দেখতে।”
চুক্তি নবায়ন শুধু ইন্টার মায়ামির জন্য নয়, বরং পুরো এমএলএস এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্রীড়াঙ্গনের জন্যও বিশাল প্রভাব ফেলবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। মায়ামি ক্লাব এখন এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে তারা অন্য অনেক দলের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমএলএসের এক ক্রীড়া পরিচালক দ্য অ্যাথলেটিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “মেসি আসার পর থেকে আমাদের লিগ নিয়ে আন্তর্জাতিক আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। কেউ কেউ লিগটিকে ‘মেসি লিগ সকার’ বলেও ডাকছে।”
তবে এমন নামকরণ যেন নেতিবাচক না হয়ে যায়, সেটিও মাথায় রাখতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। মেসির উপস্থিতিতে শুধু মার্কেটিং নয়, মাঠের পারফরম্যান্সেও দারুণ প্রভাব পড়েছে। ইন্টার মায়ামির হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৮ ম্যাচে ৪২ গোল করেছেন এবং ২১টি গোলে সহায়তা করেছেন মেসি।
এখন ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইন্টার মায়ামি। চলতি মাসের শেষদিকে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের সেমিফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে ভ্যানকুবার হোয়াইটক্যাপসের সঙ্গে।
সব মিলিয়ে, ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে মেসির এমএলএসে থাকা এবং ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলা শুধু ভক্তদের জন্য নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ব্যবসার জন্যও এক বিশাল অর্জন হতে চলেছে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ
