চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নে একটি সরকারি রাস্তা মেরামতের কাজে চাঁদা না পাওয়ায় বাধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাফেজ মীরের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় কাজের ঠিকাদার ডালিম মিয়া সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঠিকাদার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় গোবরাতলা ইউনিয়নের গকুল-খিন্নিতলা সড়কে গত কয়েক মাস ধরে মেরামতের কাজ করছেন ঠিকাদার ডালিম মিয়া। গত শুক্রবার ঠিকাদারি কাজে বাধা দেওয়ার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ইউপি সদস্য রাফেজ মীর। এ সময় স্থানীয়রা বাধা দিলে রাফেজ মীরের বাবা এরমান মীর ও ভাই রাসেল মীর দেশীয় অস্ত্র হাতে সেখানে যান। স্থানীয়দের প্রতিরোধে তারা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ দেশীয় অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে।
ঠিকাদার ডালিম মিয়া জানান, কাজ শুরুর পর থেকেই ইউপি সদস্য রাফেজ মীর তাকে ফোন করে দেখা করার অনুরোধ জানাতেন এবং পরোক্ষভাবে চাঁদার ইঙ্গিত দিতেন। দেখা না করলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। শুক্রবার সরাসরি এসে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করতে বলেন এবং অনুমতি নিয়ে কাজ করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন। এমনকি শ্রমিকদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ করেন ডালিম মিয়া।
তিনি আরও বলেন, “কাজ বন্ধ করতে এমন অস্ত্রের প্রদর্শনী দেখে এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পরে ইউপি সদস্য ও তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যান। গ্রাম পুলিশের সহায়তায় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। আমি চাই, দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও চাঁপাই গ্রামীণ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাসেম আলী বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। দীর্ঘদিন পর সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজে চাঁদা চাওয়া এবং বাধা দেওয়ার চেষ্টা খুবই লজ্জাজনক। আমরা চাই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।”
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ইউপি সদস্য রাফেজ মীর বলেন, “আমি ঠিকাদারকে চা খাওয়ার জন্য ফোনে ডেকেছিলাম, তবে কোনো চাঁদা চাইনি। কাজেও কোনো বাধা দিইনি। এটি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের চক্রান্ত।” দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান জানান, “ঠিকাদার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাছমিনা খাতুনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ
