প্রিমিয়ার লিগে গতকাল রাতে ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে ম্যানচেস্টার সিটি। ম্যাচটি শেষ হয় ৫-২ গোলের দৃষ্টিনন্দন জয়ে, যেখানে এক অনন্য রেকর্ড গড়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখালেন দলের ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এদেরসন।
এদিন প্যালেসের বিপক্ষে সিটির হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন ইংলিশ মিডফিল্ডার জেমস ম্যাকাথে। তবে এই গোলটির পেছনে বড় অবদান রেখে দিয়েছেন গোলরক্ষক এদেরসন। এক নজরে মাঠ বিশ্লেষণ করে মাঝমাঠে থাকা ম্যাকাথেকে লক্ষ্য করে নিখুঁত একটি পাস দেন তিনি। বলটি প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে এনে, দ্বিতীয় ছোঁয়ায় বক্সে ঢুকে এবং গোলরক্ষককে কাটিয়ে কোনাকুনি শটে স্কোরলাইন ৪-২ করেন ম্যাকাথে।
এই অ্যাসিস্টটি চলতি মৌসুমে এদেরসনের চতুর্থ। ২০১৭ সালে ইংলিশ ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর তার মোট অ্যাসিস্টের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে সাতটি। এর আগে ২০১৮, ২০২১ ও ২০২২ সালে একটি করে অ্যাসিস্ট করেছিলেন তিনি। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে কোনো গোলরক্ষকই এর আগে এক মৌসুমে দুইটির বেশি অ্যাসিস্ট করতে পারেননি। এই রেকর্ড এবার চতুর্থ অ্যাসিস্ট দিয়ে ভেঙে দিলেন ৩১ বছর বয়সী এদেরসন।
এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে প্রিমিয়ার লিগ ইতিহাসে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট করা গোলরক্ষকে পরিণত হয়েছেন এদেরসন। তার ঠিক পরেই আছেন পল রবিনসন (৫টি অ্যাসিস্ট), ডেভিড সিমান এবং পেপে রেইনা (প্রত্যেকে ৪টি করে অ্যাসিস্ট)। এছাড়াও তিনটি করে অ্যাসিস্ট রয়েছে পিটার স্মাইকেল, অ্যালিসন বেকার, টিম হাওয়ার্ড, জুসি জাস্কেলাইনেন এবং মার্ক ক্রসলির।
শুধু প্রিমিয়ার লিগ নয়, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগেও কোনো গোলরক্ষকের এত বেশি অ্যাসিস্ট নেই। এদেরসনের এই পরিসংখ্যান ছাড়িয়ে গেছে অনেক আউটফিল্ড খেলোয়াড়কেও।
সিটিরই আরেক তারকা ফিল ফোডেনের অ্যাসিস্ট সংখ্যা এই মৌসুমে মাত্র ২টি। জানুয়ারিতে দলে যোগ দেওয়া ওমর মারমুশ ছয়টি গোল করলেও অ্যাসিস্ট করেছেন মাত্র একটি। একই পরিসংখ্যান রয়েছে জ্যাক গ্রিলিশের ক্ষেত্রেও।
এমনকি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আলেহান্দ্রো গার্নাচো, আর্সেনালের মিকেল মেরিনো, ইথান এনওয়ানিরি এবং কাই হ্যাভার্টজও এদেরসনের চেয়ে অ্যাসিস্টে পিছিয়ে আছেন। আর্সেনালের মিডফিল্ডার মার্টিন ওডেগার্ড এবং অ্যাস্টন ভিলার মার্কাস রাশফোর্ডের অ্যাসিস্ট সংখ্যাও এদেরসনের সমান – চারটি।
লা লিগায় পিএসজির সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপ্পেও এই মৌসুমে অ্যাসিস্ট করেছেন মাত্র তিনটি। সেই হিসেবে তার থেকেও একধাপ এগিয়ে আছেন এদেরসন।
গোল রক্ষা করাটাই যেখানে মূল কাজ, সেখানে অ্যাসিস্ট দিয়ে দলকে জেতানো—এদেরসনের এই পারফরম্যান্স নিঃসন্দেহে এক বিস্ময়। শুধু রক্ষণে নয়, আক্রমণেও যে গোলরক্ষক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন, সেটার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে থাকবেন এদেরসন।
তথ্যসূত্র: দৈনিক কালের কণ্ঠ
