সৌদি আরবের সদ্য বিদায় নেওয়া রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ বিন ঈসা আল দুহাইলানের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ আদায়ের চেষ্টা ও প্রতারণার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
রাজধানীর ভাটারা থানায় দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে মো. দেওয়ান সমির নামের ৫৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে শনিবার ঢাকা মহানগর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন। তিনি ‘কাওয়াই’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং ‘সানজানা ম্যানপাওয়ার’-এর কর্ণধার।
মামলার এজাহারে বলা হয়, দেওয়ান সমির সম্প্রতি মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া মডেল ও অভিনেত্রী মেঘনা আলমের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেওয়ান সমির ও তার সহযোগীরা সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন এবং পরে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করতেন।
ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফুল ইসলাম দশ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গত ১০ এপ্রিল রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে অভিযুক্ত সমিরকে আটক করা হয়।
রিমান্ড আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, “প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, সমির একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য, যারা সুন্দরী নারীদের ব্যবহার করে বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং পরবর্তীতে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।”
প্রসঙ্গত, চক্রটি সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ বিন ঈসা আল দুহাইলানকে টার্গেট করে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে যোগাযোগ শুরু করে এবং একপর্যায়ে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করে।
মামলায় আরও একাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হলেও তাদের নাম প্রকাশ করেননি ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম। মডেল মেঘনা আলমের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করেননি।
এর আগে, বুধবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে মডেল ও মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মেঘনা আলমকে আটক করে পুলিশ।
পরে বৃহস্পতিবার রাতে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহ বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মেঘনা আলমকে আটকের পর তার একটি ফেসবুক লাইভ এবং ‘অপহরণ’ ও ‘গুম’ হওয়া সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়।
শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, “মেঘনা আলমকে দরজা ভেঙে বাসা থেকে অপহরণ করা হয়েছে” বলে যে অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে, তা সঠিক নয়। তাকে যথাযথ আইন মেনেই নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ডিএমপির এক কর্মকর্তা জানান, সৌদি দূতাবাসের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মেঘনাকে গ্রেপ্তার করে।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ
